১০ শতাংশ মানুষের জীবনে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আজকাল বিভিন্ন বয়সের মানুষের কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এর কারণ কী? প্রতিকারই–বা কী?
আসুন জেনে নেওয়া যাক:
কিডনিতে পাথর হওয়ার অনেক কারণ আছে। নানা কারণেই কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা থাকে, যেমন ১. বয়স ২০-৫০ বছর; ২. লিঙ্গ-পুরুষ: নারী=৩: ১; ৩. জেনেটিক বা বংশগত কারণ ২৫ শতাংশ; ৪. পরিবেশগত কারণ, যেমন গরম পরিবেশ, অতিরিক্ত ওজন, ব্যায়াম না করা, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করা, অতিরিক্ত আমিষজাতীয় খাদ্য ও লবণ গ্রহণ ইত্যাদি।
এ ছাড়া কিছু রোগ, যেমন হাইপারপ্যারাথাইরয়েডিজম, রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধির কারণেও পাথর হতে পারে। ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়লেও ইউরিক অ্যাসিড স্টোন ও গাউট হয়। ঘন ঘন প্রস্রাবে ইনফেকশনও কিডনিতে পাথরের একটি কারণ।
লক্ষণ
- কোমরের পাশে ব্যথা।
- কোমর থেকে তলপেট হয়ে ব্যথা অনেক সময় অণ্ডকোষ বা পায়ের দিকে যেতে পারে।
- প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
- বারবার প্রস্রাবে ইনফেকশন।
- বমি, জ্বর, মাথাব্যথা, খাবারে অরুচি ইত্যাদি।
- জটিলতা হলে কিডনি বিকল হতে পারে।
শনাক্ত কীভাবে
- পেটের আলট্রাসনোগ্রাম, কোমরের এক্স-রে বা আইভিইউ করে পাথর শনাক্ত করা যায়।
- সিটি স্ক্যান, সিটি ইউরোগ্রাম, এমআরআই ইউরোগ্রাম দরকার হতে পারে।
- কিডনির কার্যকারিতা দেখতে ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা।
চিকিৎসা
কিডনিতে পাথরের চিকিৎসা তিন ভাগে ভাগ করতে পারি। ১. ব্যথা কমানো ও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ; ২. কিডনি ও কিডনিনালির পাথর অপসারণ; ৩. আবার যাতে পাথর না হয়, সে ব্যবস্থা নেওয়া।
এ ছাড়া নিয়মিত পরিমিত পানি পান, দেহের অতিরিক্ত ওজন কমানো, নিয়মিত ব্যায়াম, অতিরিক্ত লবণ পরিহার এবং কোনো কারণ জানতে পারলে এর সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
দেশে বর্তমানে কিডনি ও কিডনিনালি এবং মূত্রনালির পাথর অপসারণের অত্যাধুনিক পদ্ধতি চালু হয়েছে। বিশেষ করে প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে লেজারের সাহায্যে, পিঠের দিকে একটিমাত্র ছিদ্র করে (পিসিএনএল) কিডনি থেকে পাথর বের করা সম্ভব; যা সম্পূর্ণ নিরাপদ। তাই সঠিকভাবে রোগ নিরূপণের মাধ্যমে যথাসময়ে চিকিৎসা গ্রহণ ও পাথর অপসারণ করে কিডনিকে সুস্থ রাখতে অভিজ্ঞ ইউরোলজি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি।
ডা. মো. নওশাদ আলম
ইউরোলজি বিশেষজ্ঞ, ইউরোলজি বিভাগ, আলোক হাসপাতাল লি., মিরপুর-৬, ঢাকা